রাজধানীর উত্তরার বিএনএস ভবনের সামনে আওয়ামী লীগ ও বিএনপির ব্যাপক সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে।এতে বিএনপির কেন্দ্রীয় নেতাসহ অর্ধশতাধিক আহত হওয়ার খবর পাওয়া গেছে।শিক্ষার্থী, পথচারীসহ আওয়ামী লীগেরও কয়েকজন আহত হয়েছে।
বিএনপির কর্মসূচিকে কেন্দ্র করে রাজধানীর উত্তরার বিএনএস ভবনের সামনে ও তার উল্টোদিকে সকাল থেকেই প্রচুর সংখ্যক পুলিশ মোতায়েন করা হয়।
সকাল ১১টার দিকে সরেজমিনে দেখা যায়, পুলিশ বিএনএস ভবনের সামনে ও উল্টোদিকে অবস্থান নিয়েছে। বেলা ১১টা ১৮ মিনিটের দিকে বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক সৈয়দ এমরান সালেহ প্রিন্স, সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক শরিফুল আলম, গাজীপুর জেলা বিএনপির সভাপতি ফজলুল হক মিলন ও ঢাকা মহানগর উত্তর বিএনপির সদস্য সচিব আমিনুল হকের নেতৃত্বে স্লোগান দিয়ে একটি মিছিল বিএনএস ভবনের সামনের সড়কে অবস্থান নেয়। এ সময় তিনদিক থেকে নেতাকর্মীরা মিছিল নিয়ে তাদের সঙ্গে যুক্ত হন। সরকারবিরোধী নানা স্লোগান দিতে থাকেন তারা। এ সময় পুলিশ তাদের সড়ক ছেড়ে দেওয়ার অনুরোধ করলে তারা বিএনএস ভবনের সামনে ফুটপাতে অবস্থান নিয়ে স্লোগান দিতে থাকেন।
দুপুর ১২টার দিকে হঠাৎ করে প্রথমে পরপর দুটি ককটেল বিস্ফোরণ হয়।পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে নিতে পুলিশ টিয়ারশেল নিক্ষেপ করতে থাকে। এ সময় বিএনপি নেতাকর্মীরা ছত্রভঙ্গ হয়ে বিএনএস ভবনের পাশের গলিতে অবস্থান নেন। একই সঙ্গে হাউজ বিল্ডিংয়ের দিক থেকে বিএনপি নেতাকর্মীরা মিছিল নিয়ে আসতে থাকে। একই সময় উল্টোদিকে আজিমপুরের দিক থেকে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা মিছিল নিয়ে আসলে দুপক্ষের মধ্যে সংঘর্ষ বাধে।এ সময় আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের হাতে দেশীয় ধারাল অস্ত্র, রড, লাঠি ও পাইপ দেখা যায়। প্রথমে বিএনপির নেতাকর্মীরা প্রতিরোধ করার চেষ্টা করে।একপর্যায়ে পুলিশ লাঠিচার্জ ও আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীরা ধাওয়া করে।শুরু হয় দুইপক্ষের মধ্যে ব্যাপক সংঘর্ষ।দুইপক্ষই ইটপাটকেল নিক্ষেপ করতে থাকে।এতে মূল সড়ক ও আশপাশের অলিগলি রণক্ষেত্রে পরিণত হয়। এ সময় এক পাশের সড়কে যানচলাচল বন্ধ হয়ে যায়। সাধারণ মানুষকে এদিক-ওদিক ছুটোছুটি করতে দেখা যায়।
এ সময় মূল সড়ক নিয়ন্ত্রণে নেয় আওয়ামী লীগ। ঘণ্টাব্যাপী এ সংঘর্ষে বিএনপির সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক শরিফুল আলম, গাজীপুর জেলা বিএনপির সভাপতি ফজলুল হক মিলন ও ঢাকা মহানগর উত্তর বিএনপির সদস্য সচিব আমিনুল হকসহ বেশ অর্ধশতাধিক নেতাকর্মী আহত হন।
এছাড়াও কয়েকজন পথচারী ও শিক্ষার্থীও আহত হয়েছেন। আওয়ামী লীগেরও কয়েকজন আহত হয়। দুপুর সোয়া ১টার দিকে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হলে ফের যানচলাচল স্বাভাবিক হয়।
সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত পুলিশ অন্তত ৮ জনকে আটক করে নিয়ে যেতে দেখা গেছে।
শরিফুল আলম, ফজলুল হক মিলন ও আমিনুল হকসহ আহত বিএনপি নেতাকর্মীরা রাজধানীর বিভিন্ন হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন। দুপুর দুইটার দিকে উত্তরা আধুনিক মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে গিয়ে দেখা যায়, শরিফুল আলম সেখানে চিকিৎসা নিচ্ছেন। তার বাম হাত ফুলে গেছে। প্রাথমিক চিকিৎসা নিয়ে তাকে চলে যেতে দেখা যায়। এ সময় বিএনপি ও অঙ্গ-সহযোগী সংগঠনের অন্তত ২০ জনকে চিকিৎসা নিতে দেখা গেছে।