খুলনায় গল্লামারী ব্রিজের কাজ দ্রুত সম্পন্ন ও যানজট নিরসনের দাবিতে সংবাদ সম্মেলন
শেখ নাসির উদ্দিন, খুলনাঃ গল্লামারী ব্রিজ নির্মাণের কাজ দ্রুত সম্পন্ন ও যানজট নিরসনে কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণের দাবীতে খুলনা নাগরিক সমাজের উদ্যোগে সংবাদ সম্মেলন শনিবার (২ নভেম্বর) বেলা ১১ টায় ব্রিজ সংলগ্নে ( পূর্ব পাড়ে) অনুষ্ঠিত হয়। সংবাদ সম্মেলনে সভাপতিত্ব করেন নাগরিক সমাজের আহ্বায়ক বীর মুক্তিযোদ্ধা আলহাজ্ব অ্যাডভোকেট আ ফ ম মহসীন। লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন সদস্য সচিব অ্যাডভোকেট মোহাম্মদ বাবুল হাওলাদার। এসময় অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন শিক্ষক নেতা বীর মুক্তিযোদ্ধা নিতাই পাল, জননেতা শেখ মফিদুল ইসলাম, মিজানুর রহমান বাবু,আইন ও অধিকার বাস্তবায়ন ফোরামের খুলনা বিভাগীয় সভাপতি এস এম দেলোয়ার হোসেন, কবি ও সাংবাদিক আবু আসলাম বাবু, খুলনা উন্নয়ন আন্দোলনের চেয়ারম্যান শেখ মোঃ নাসির উদ্দিন, খুলনা ডেভেলপমেন্ট সোসাইটি ( কেডিএস) এর চেয়ারম্যান আব্দুস সালাম শিমুল, কবি ও উন্নয়ন সংগঠক নাজমুল তারেক তুষার,কে এইচ ফাউন্ডেশনের খ ম শাহিন হোসেন, অধ্যাপক সঞ্জয় সাহা, অ্যাডভোকেট মেহেদী হাসান, মীর মোহাম্মদ কবির হোসেন, মাহফুজ চৌধুরী লিটন, রিয়াজুল ইসলাম রানা, মোঃ নাজমুল হাসান প্রমুখ।
সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে বলা হয়, অনেক চড়াই উৎরাই পেরিয়ে গল্লামারী ময়ুর নদের উপর ইতিপূর্বে একটি দৃষ্টিনন্দন ব্রিজ নির্মাণ প্রকল্প গৃহীত হয়েছে। ব্রিজ নির্মাণের কাজ শুরু হয়ে কিছুটা এগিয়ে দীর্ঘ সময় ধরে স্থগিত রয়েছে। বলা চলে কাজটি বর্তমানে পতিত অবস্থায় আছে। উপরন্তু ব্যস্ততম এলাকার সড়কের কমপক্ষে দুই তৃতীয়াংশ জায়গা ঘিরে আটক রেখে সমগ্র এলাকা জুড়ে অচল অবস্থা সৃষ্টি করে রাখা হয়েছে। ফলশ্রুতিতে , একদিকে যেমন যানবাহন চলাচলে মারাত্মক বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি হচ্ছে, অন্যদিকে সকাল থেকে গভীর রাত পর্যন্ত অসহনীয় যানজট সৃষ্টি হচ্ছে। গল্লামারী এখন একটি অসহ্য যন্ত্রনার নাম।
যানবাহনের চাপ বৃদ্ধি পাওয়ায় ব্রিটিশ আমলে ময়ূর নদের উপর নির্মিত ব্রিজটির পাশে ২০১৬ সালে ৭ কোটি টাকা ব্যয়ে একটি ব্রিজ নির্মাণ করা হয়,যার নকশা মারাত্মক অপরিকল্পিত। ময়ূর নদ রক্ষা, নৌযান চলাচল প্রভৃতি বিষয়ে বিবেচনা না নিয়ে সম্পুর্ন আনাড়ি কায়দায় ব্রিজটি নির্মাণ আমাদের রীতিমতো হতবাক করেছে। প্রকৌশলী,নকশাবিদদের প্রকৌশল ও পেশাগত জ্ঞান সম্পর্কে জনসাধারণ বিস্মিত হয়েছে। বিভিন্ন সংগঠন ও বিভিন্ন শ্রেণী পেশার মানুষ তখনই ঐ প্রকল্পটির বিরোধীতা করলেও কর্তৃপক্ষ তাদের তত্কালীন খুঁটির জোরে সবকিছুকে থোড়াই কেয়ার করে ব্রিজটির নির্মাণ কাজ সম্পন্ন করেন। অথচ মাত্র ৩/৪ বছরের ব্যবধানে সেটি ভেঙ্গে দুই লেন বিশিষ্ট নতুন ব্রিজ নির্মাণ প্রকল্প গ্রহণের সিদ্ধান্ত নেয়া হয়। আমরা আপনাদের মাধ্যমে পূর্বের ব্রিজটির নির্মাণের সাথে সংশ্লিষ্ট সকলকে জবাবদিহিতা ও আইনের আওতায় এনে বিচারের মুখোমুখি দাঁড় করিয়ে রাষ্ট্র তথা জনগণের অর্থ অপচয়ে শাস্তি হিসেবে সুষ্ঠ বিচার প্রক্রিয়ার মাধ্যমে দৃষ্টান্ত স্থাপন করার জন্য কতৃপক্ষের প্রতি আহ্বান জানাচ্ছি।
দুই লেন বিশিষ্ট প্রতি লেন ৬৮,৭০ মিটার দৈর্ঘ্যের ১৩,৭০ মিটার প্রস্থের এবং পানির স্তর থেকে ৫ মিটার উচ্চতায় প্রায় ৬৮ কোটি টাকার এ প্রকল্পের কাজ’ ২৩’সালের শেষের দিকে শুরু হলেও আচমকা থমকে যায়।২০২৫ সালের মে মাসের মধ্যে যার কাজ শেষ হওয়ার কথা। কিন্তু নির্মাণ কাজ এভাবে পতিত অবস্থায় থাকলে যেমন ইতিপূর্বের সম্পুর্ন কাজ এবং ফেলে রাখা নির্মাণ সামগ্রী অবচয় ও অপচয়ের মাধ্যমে ব্রিজটি আয়ুষ্কাল হারিয়ে নির্ধারিত স্থায়ীত্ব হারাবে। অন্যদিকে নির্ধারিত সময়ের মধ্যে প্রকল্পের কাজ সম্পন্ন করতে না পারলে প্রকল্পের মেয়াদ বৃদ্ধি করতে হবে এবং তাতে প্রকল্প ব্যয় ও বৃদ্ধি পাবে।এ কাজের জন্য দাপ্তরিক প্রক্রিয়ার আমলাতান্ত্রিক জটিলতা ও মারাত্মক। সার্বিক বিবেচনায় নির্মাণ কাজ ঝুলে গেলে এটি সম্পন্নের ব্যপারে আমরা যথেষ্ট সন্দিহান। আমরা আপনাদের মাধ্যমে খুলনা মহানগর এ অঞ্চলের জন্য অতীব জরুরি এ ব্রিজটির নির্মাণ কাজ দ্রুত সম্পন্নের নিমিত্তে সড়ক ও জনপথ বিভাগ সহ সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ এবং যানজট নিরসনের কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণের জন্য কতৃপক্ষের দৃষ্টি আকর্ষণ করছি।