খুলনায় ডিজিটাল বোর্ডে নিষিদ্ধ ছাত্রলীগের ফিরে আসার বার্তা; পুলিশ হেফাজতে ১ জন
শেখ মোঃ নাসির উদ্দীন, খুলনাঃ খুলনা রেল স্টেশনের ডিজিটাল বোর্ডে একটি অপ্রত্যাশিত এবং বিতর্কিত বার্তা প্রদর্শিত হওয়ার পর ঘটনাটি দ্রুতই এলাকায় উত্তেজনার সৃষ্টি করে।
শনিবার (১৪ ডিসেম্বর) রাতে রেল স্টেশনের মূল ফটকের ডিজিটাল বোর্ডে হঠাৎ ভেসে ওঠে, “ছাত্রলীগ ফিরে আসবে ভয়ংকর রূপে, জয় বাংলা, জয় বঙ্গবন্ধু, শেখ হাসিনা ফিরে আসবে।”
এ ধরনের বার্তা দেখে রেলওয়ে শ্রমিকদল এবং স্থানীয় বিএনপি নেতৃবৃন্দ তৎক্ষণাৎ প্রতিবাদে ফেটে পড়েন। বার্তাটির ভাষা এবং বিষয়বস্তু জনমনে শঙ্কা ও রাজনৈতিক উত্তেজনা সৃষ্টি করে। তাৎক্ষণিকভাবে বিক্ষুব্ধ জনতা ডিজিটাল বোর্ড অপারেটর ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানের কর্মী আসলাম হোসেন সেন্টুকে ধরে পুলিশের হাতে তুলে দেয়।
বার্তাটির ভাষা একটি নিষিদ্ধ ছাত্রসংগঠনের কার্যক্রমের প্রতি ইঙ্গিতপূর্ণ এবং হুমকিসূচক ছিল। “ছাত্রলীগ ফিরে আসবে ভয়ংকর রূপে”—এই ধরণের উস্কানিমূলক বার্তা জনমনে ভীতি ও অসন্তোষ ছড়িয়ে দেয়। বিশেষত এটি এমন এক সময়ে ঘটেছে, যখন দেশের রাজনৈতিক পরিস্থিতি বেশ উত্তপ্ত। খুলনা রেল স্টেশন একটি গুরুত্বপূর্ণ জনসমাগম কেন্দ্র, যেখানে এ ধরনের বার্তা আরও বৃহত্তর প্রভাব ফেলতে পারে।
রেলওয়ে শ্রমিকদল, বৈষম্য বিরোধী ছাত্ররা ও স্থানীয় বিএনপি নেতৃবৃন্দ বার্তার বিরুদ্ধে তৎক্ষণাৎ প্রতিবাদ জানান। বিক্ষুব্ধ জনতা ডিজিটাল বোর্ড অপারেটরের দায়িত্বে থাকা ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানের কর্মীকে সন্দেহভাজন হিসেবে চিহ্নিত করে। পরে তাকে পুলিশে সোপর্দ করা হয়।
পুলিশ বর্তমানে আসলাম হোসেন সেন্টুকে হেফাজতে নিয়ে ঘটনার তদন্ত করছে। এটি এখনও পরিষ্কার নয়, বার্তাটি কার দ্বারা এবং কী উদ্দেশ্যে প্রদর্শিত হয়েছিল। এটি একটি সুপরিকল্পিত ষড়যন্ত্র হতে পারে অথবা প্রযুক্তিগত নিরাপত্তার ফাঁকফোকর থেকেও ঘটে থাকতে পারে। এ ধরনের ঘটনার পেছনে প্রকৃত দোষীকে চিহ্নিত করতে পুলিশের নিরপেক্ষ তদন্ত প্রয়োজন।
এ ধরনের ঘটনা রাজনৈতিক উত্তেজনা বাড়িয়ে তোলার পাশাপাশি জনমনে অস্থিরতা সৃষ্টি করতে পারে। প্রশাসনের উচিত দ্রুত ও সঠিক তদন্তের মাধ্যমে দোষীদের চিহ্নিত করা এবং তাদের বিরুদ্ধে যথাযথ আইনি ব্যবস্থা নেওয়া। পাশাপাশি, রেল স্টেশনের মতো গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনায় ডিজিটাল নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করা অত্যন্ত জরুরি, যাতে ভবিষ্যতে এমন ঘটনা আর না ঘটে।
এই ঘটনার মধ্য দিয়ে প্রযুক্তি ব্যবস্থাপনার দুর্বলতা এবং রাজনৈতিক প্রভাবের সংবেদনশীলতা উভয়ই স্পষ্ট হয়ে উঠেছে। এ বিষয়ে প্রশাসনের দায়িত্বশীল পদক্ষেপ জনগণের আস্থা ফিরিয়ে আনতে সহায়ক হবে।