খুলনায় বিদ্যুতের মিটার রেন্ট ও ডিম্যান্ড চার্জ প্রত্যাহার না করলে কঠোর কর্মসূচি গ্রহণ করবে নাগরিক সমাজ
শেখ নাসির উদ্দিন, খুলনা: বিদ্যুতের অযৌক্তিক মিটার রেন্ট ও ডিম্যান্ড চার্জ প্রত্যাহারের দাবিতে খুলনা নাগরিক সমাজের উদ্যোগে আজ শনিবার (১২ অক্টোবর) বেলা ১১টায় নগরীর পিকচার প্যালেন মোড়ে মানববন্ধন ও সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়।
খুলনা নাগরিক সমাজের আহ্বায়ক বীর মুক্তিযোদ্ধা আলহাজ্ব অ্যাড, আ.ফ.ম মহসীনের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত কর্মসূচিতে স্বাগত বক্তব্য রাখেন সংগঠনের সদস্য সচিব অ্যাড. মোঃ বাবুল হাওলাদার। এতে খুলনা ডেভেলপমেন্ট সোসাইটি (কেডিএস) ব্যানার সহকারে সংহতি প্রকাশ করে। সংগঠনের সদস্য আফজাল হোসেন রাজুর সঞ্চালনায় সংহতি প্রকাশ করে উপস্থিত ছিলেন ও বক্তৃতা করেন বাংলাদেশের ওয়ার্কার্স পার্টির মহানগর সভাপতি শেখ মফিদুল ইসলাম, জেলা সাধারণ সম্পাদক দেলোয়ার উদ্দিন দিলু, বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টি (সিপিবি)'র সাবেক মহানগর সভাপতি মিজানুর রহমান বাবু, বীর মুক্তিযোদ্ধা শিক্ষক নিতাই পাল, দক্ষিণ অঞ্চল উন্নয়ন পরিষদের মহাসচিব ইঞ্জিনিয়ার বহুল আমিন হাওলাদার, উন্নয়ন সংগঠক ও সমাজসেবক এম এ কাশেম, খুলনা ডেভেলপমেন্ট সোসাইটি (কেডিএস)'র সভাপতি আব্দুস সালাম শিমুল, অবসরপ্রাপ্ত ব্যাংক কর্মকর্তা এফ এম মনিরুজ্জামান, সাবেক ছাত্র নেতা এস এম চন্দন, খুলনা উন্নয়ন আন্দোলনের চেয়ারম্যান শেখ মোঃ নাসির উদ্দিন, খুলনা অঞ্চল পরিবেশ রক্ষা কমিটির চেয়ারম্যান মোঃ মোসলেহউদ্দিন (তুহিন), নিরাপদ সড়ক চাই (নিসচা)'র সাবেক খুলনা জেলা সভাপতি হাসিবুর রহমান হাসিব, আয়কর উপদেষ্টা এম হানিফ হোসেন, অ্যাড. মোমিনুল ইসলাম, নিসচা মহানগর সাধারণ সম্পাদক সাংবাদিক মাহবুবুর রহমান মুন্না, সমাজ সেবক আখম শাহীন হোসেন, কবি নাজমুল তারেক তুষার, শাহ অহিদুজ্জামান জাহাঙ্গীর, অধ্যাপক সঞ্জয় সাহা, এস এম রহিম, অ্যাড, মেহেদী হাসান, গোলাম রব্বানি ভূঁইয়া, নতুন তারার প্রতিষ্ঠাতা সাইফুর রহমান মিনা, চিত্রশিল্পী মিলন বিশ্বাস, প্রধান শিক্ষক সাঈদা পারভীন, মল্লিক আরাফাত হোসেন, কাজী কামরুল ইসলাম, এস এম নাজমুল হাসান, মোঃ চুন্নু খন্দকার, শেখ ইয়াসিন, মোঃ ওয়াসিফ খান, জাকারিয়া হোসেন, অনিক দত্ত প্রমুখ।
সমাবেশে বক্তারা বলেন, ২০১৪ সালে প্রিপেইড মিটার স্থাপনের একটি পাইলট প্রকল্প গ্রহণ করে ওজোপাডিকো। যার অধীনে খুলনায় ২০১৫ সালে প্রিপেইড মিটার স্থাপনের কাজ শুরু হয়। প্রিপেইড মিটার স্থাপন কালে ওজোপাডিকোর পক্ষ থেকে বলা হয়েছিল, বিনামূল্যে এ মিটার স্থাপন করা হচ্ছে। এ বাবদ কোনো মূল্য নেয়া হবে না। কিন্তু অত্যন্ত দুঃখের সাথে আময়া লক্ষা করলাম যে, কিছুদিন যেতে না যেতেই সংস্থাটি মিটার প্রতি আবাসিক মিটারে মাসে ৪০ টাকা এবং বাণিজ্যিক মিটারে ২৫০ টাকা হারে ভাড়া গ্রহণ করা শুরু করলো, যা গ্রাহকদের সাথে রীতিমত মিথ্যাচার ও প্রতারণা। খুলনা নাগরিক সমাজসহ অন্যান্যদের আন্দোলনের মুখে তৎকালীন ব্যবস্থাপনা পরিচালক সংবাদ সম্মেলন করে অন্যান্য প্রতিশ্রুতির সাথে ঘোষণা করেছিলেন যে, মিটারের মূল্য সমন্বয় হওয়ার পর আর কোনো মিটার ভাড়া নেয়া হবে না। আমাদের জানামতে, মিটার স্থাপনের সময় আবাসিক মিটারের জন্যমূল্য ছিল ৩,২০০ টাকা এবং বাণিজ্যিক মিটারের মূল্য ছিল ১৪,০০০ টাকার মত। অথচ, গত ৮ বছর যাবত উপরিল্লিখিত হারে মিটার ভাড়া নেয়া হচ্ছে, যা একমূলোর চেয়ে অনেক বেশি নেয়া হয়েছে। সংস্থাটি ইতোপূর্বে খুলনায় ৬১ হাজার আবাসিক এবং ২ হাজার বাণিজ্যিক মিটার স্থাপন করেছে। এই বিশাল সংখ্যার মিটার থেকে লাগাতারভাবে অতিরিক্ত মিটার ভাড়া গ্রহণ করা হচ্ছে, না শুধুমাত্র বাড়ির মালিকদেরই নয় সিংহভাগ ক্ষেত্রে ভাড়াটিয়াদের ঘাড়ে এসে পড়ছে। ফলশ্রুতিতে স্বল্প আয়ের মানুষকেই এর দায়ভার নিতে হচ্ছে। অন্যদিকে প্রিপেইড মিটার স্থাপনের সময় সংস্থাটি পূর্বের এনালগ মিটার খুলে নিলেও তার জামানত/মূল্য সমন্বয় করা হয়নি। পরিতাপের বিষয়, এ ব্যাপারে সংস্থাটি নির্বিকার। একদিকে গ্রাহক ব্যবহৃত বিদ্যুতের উপর ভ্যাটি প্রদান করছে, যা সংবিধিবদ্ধ। অন্যদিকে বিদ্যুতের চার্জ বাবদ মোট চার্জ হিসেবে অর্থ নোয়ায় পরও ডিম্যান্ড চার্জের নামে একটি বিশাল অংকের টাকা গ্রহণ করছে সংস্থাটি। যে বিষয়টি আমাদের নিকট বোধগম্য বা গ্রহণযোগ্য নয়। বক্তারা বলেন, মোট চার্জ ২৫.১১%, ডিম্যান্ড চার্জ ১৬.৮টি, ভ্যাট ৪.৭৬টি। অর্থাৎ প্রতি ১০০ টাকায় গ্রাহকের খরচ হচ্ছে ৪৬.৬৭ টাকা। এর উপর বাড়তি মিটার ভাড়া। একদিকে ভ্যাট, যেটি প্রতিওমান যোগ্য। অন্যদিকে মোট চার্জ, মিটার ভাড়া, আবার ডিম্যান্ড চার্জ। বিষয়টি আমাদেরকে হতবাক করে। অবিলম্বে দাবী পুরণ করা না হলে কঠোর কর্মসূচি গ্রহণ করা হবে বলে বক্তারা হুশিয়ার উচ্চারণ করেন।