নাগরপুরে ঠিকাদার পরিচয়ে প্রতরণা করে লাখ লাখ টাকা হাতিয়ে নিলো প্রতারক টিটু
মোঃআব্দুল্লাহ খিজির,নাগরপুর(টাংগাইল)প্রতিনিধি: টাংগাইলের নাগরপুরে পানি উন্নয়ন বোর্ডের ঠিকাদার পরিচয়ে লাখ লাখ টাকা হাতিয়ে নেওয়ার অভিযোগ উঠেছে আওয়ামী লীগ নেতা ফখরুল হাদি টিটুর বিরুদ্ধে। প্রতারক টিটু উপজেলার ভাদ্রা ইউনিয়নের কোদালিয়া গ্রামের ফজলুর রহমানের ছেলে।
এ বিষয়ে উপজেলা গয়হাটা ইউনিয়নের মোল্লা ফার্মেসীর মালিক ফিরোজ বলেন, প্রায় তিন বছর আগে টাংগাইল পানি উন্নয়ন বোর্ডের ঠিকাদার পরিচয়ে প্রতারক টিটু নদীতে জিও ব্যাগ ডাম্পিং এর কথা বলে আমার নিকট থেকে মোট ৩৭ লাখ টাকা নেয়। প্রতারক টিটু আমাকে তিন মাসের মধ্যে ১৫ লাখ টাকা ব্যবসায়িক লাভ দিবে বলে আশ্বাস দেয়। কিন্তু বর্তমানে আমার টাকা পরিশোধ না করে প্রতারক টিটু পলাতক রয়েছে। প্রতারক টিটুর বিরুদ্ধে চেক ডিজঅনার ও প্রতারণা মামলা প্রক্রিয়াধীন।এছাড়া টিটুর পিতা ফজলুর ও তার ভাই ডলারও প্রতারণার সাথে জড়িত আছে।
অপর ভুক্তভোগী তিরছা ব্রিক্সের মালিক নজরুল বলেন, পানি উন্নয়ন বোর্ডের ঠিকাদার পরিচয়ে টিটু আমাকে একটি কাজ পাইয়ে দেওয়ার কথা বলে আমার নিকট থেকে ১৫ লাখ টাকা নেয়। কিন্তু বর্তমানে টিটু আমার সাথে কোন যোগাযোগ করছে না। তার বাবা ও ভাই কয়েক দফা সময় নিলেও এখনও আমার টাকা পরিশোধ করে নি।আমি তাদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নিবো।
ভুক্তভোগী মেসার্স সুজন এন্টারপ্রাইজের প্রোপাইটার সুজন বলেন,টাংগাইল পানি উন্নয়ন বোর্ডের ঠিকাদার পরিচয়ে প্রতারক টিটু ২০২২ সালের মে মাসে আমাকে বলে যে সে তার ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান মেসার্স বেলা এন্টারপ্রাইজের নামে দপ্তিয়র ইউনিয়নে নিশ্চিন্তপুর গ্রামে যমুনা নদীর তীরে ৫০ লাখ টাকার (১০ হাজার জিও ব্যাগ ডাম্পিং)কাজের ওয়ার্ক ওর্ডার পেয়েছে। কিন্তু সেই মুহূর্তে প্রতারক টিটু আমাকে প্রস্তাব দেয় যে,আপনি আমাকে( টিটুকে) ২৬ লাখ ৬০ হাজার টাকা দিলে কাজটি আপনার প্রতিষ্ঠান মেসার্স সুজন এন্টারপ্রাইজের নামে ওয়ার্ক অর্ডার করে দিবো। এতে করে আমার ভ্যাট ট্যাক্স বাদে প্রায় ২৪ লাখ টাকা লাভ হবে। এরপর আমি সরল বিশ্বাসে প্রতারক টিটুকে ২৬ লাখ ৬০ হাজার টাকা দেই। কিন্তু পরবর্তীতে প্রতারক টিটু আমার প্রতিষ্ঠানের নামে কাজটির ওয়ার্ক ওর্ডার করে দেয় নাই।বিষয়টি আমি জানতে পারলে প্রতারক টিটুকে আমি ব্যবাসায়িক লাভ সহ আমার মূল টাকা ফেরত দিতে বলি।এরপর প্রতারক টিটু আমাকে NRBC ব্যাংক নাগরপুর শাখার মেসার্স সুজন এন্টারপ্রাইজের নামে ৪০ লাখ ৫০ হাজার একটি চেক ও একই শাখার আরও একটি ৫০ লাখ টাকার চেক দেয়। কিন্তু উক্ত ব্যাংকে যোগাযোগ করে জানতে পারি প্রতারক টিটুর একাউন্টে পর্যাপ্ত টাকা নেই। এ বিষয়ে প্রতারক টিটুর বিরুদ্ধে চেক ডিজঅনার ও প্রতারণা মামলা প্রক্রিয়াধীন রয়েছে।
একই উপজেলার আরেক ভুক্তভোগী মেসার্স খিজির এন্টারপ্রাইজের প্রোপাইটার খিজির বলেন,প্রতারক টিটু ঠিকাদার পরিচয়ে টাংগাইল পানি উন্নয়ন বোর্ডের জিও ব্যাগ ডাম্পিং কাজের কথা বলে আমার কাছ থেকে টাকা নেয়। গ্যারান্টি বাবদ NRBC ব্যাংক নাগরপুর শাখার ৪০ লাখ টাকার চেক দেয়। আমি ব্যাংকে চেকটি নগদায়নের জন্য গেলে ডিজঅনার হয়। পরে আমি টাংগাইল আদালতে প্রতারক টিটুর বিরুদ্ধে চেক ডিজঅনার মামলা দায়ের করি।
এছাড়া নাগরপুরে আরও কয়েকজন ঠিকাদার সহ স্থানীয় ব্যবসায়ীরা জানান,প্রতারক টিটু প্রতারণার মাধ্যমে তাদের কাছ থেকে লাখ লাখ টাকা আত্মসাৎ করেছে। তারা টিটুর উপযুক্ত শাস্তির দাবি জানিয়েছেন।
এ বিষয়ে অভিযুক্ত ফখরুল হাদি টিটুর মুঠোফোনে যোগাযোগ করলে মুঠোফোনটি বন্ধ পাওয়া যায়।