রৌমারীতে নানা অনিয়মের অভিযোগে পল্লী বিদ্যুৎ কর্মচারীকে লাঞ্চিত
- আপডেট সময় : ০৯:২১:৫১ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২৬ সেপ্টেম্বর ২০২৪ ১১০ বার পড়া হয়েছে
রৌমারীতে নানা অনিয়মের অভিযোগে পল্লী বিদ্যুৎ কর্মচারীকে লাঞ্চিত
আব্দুল খালেক রৌমারী কুড়িগ্রাম প্রতিনিধঃ-
কুড়িগ্রামের রৌমারীতে ভয়াবহ লোডশেডিং, নিয়মিত বিলের চেয়ে অতিরিক্ত বিল আদায়, ইউনিট ব্যবহার না করেও ভাওতা বিল তৈরি, সচল মিটার নষ্ট দেখিয়ে অতিরিক্ত বিল তৈরি, মিটার পরিবর্তনের অজুহাতে চাদা আদায়, অর্থের বিনিময় ভিআইপি বিদ্যুৎ লাইন সংযোগ সহ নানা অনিয়মের অভিযোগে পল্লী বিদ্যুৎ অফিসে দফায় দফায় হামলা, বিদ্যুৎ সংযোগ কাজে বাধা, কর্মচারিদের জিম্মি করে লাইন সংযোগ নেওয়া, বিদ্যুৎ অফিসের কর্মকর্তা কর্মচারীদেরকে আটক রাখতে মসজিদে মসজিদে মাইকিনসহ বিদ্যুৎ সংযোগ কর্মচারীদের সাথে অসৌজনমূলক আচারণের ঘটনা ঘটেছে। এঘটনায় কর্মকর্তা কর্মচারীদের নিরাপত্তা চেয়ে উপজেলা নির্বাহী অফিসার বরাবর লিখিত আবেদন দিয়েছেন রৌমারী ডেপুটি জোনারেল ম্যনেজার মেহেদী মাসুদ।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, তীব্র গরম ও লোডশোডিং সাধারণ মানুষ, রোগী ও শিক্ষার্থীদের পড়াশোনাসহ শিক্ষকগণের পাঠদান মারাত্মক ভাবে ব্যাহত হচ্ছে। অপর দিকে বিদ্যুৎ অফিসের কর্মচারীরা বাইটকামারী গ্রামকে সংযোগ বিছিন্ন করে বাগুয়ারচরে ভিআইপি লাইন সংযোগ দেয়। এ সংযোগকে কেন্দ্র করে লোডশোডিং থেকে মুক্তির লক্ষে বাইটকামারী গ্রামের স্থানীয় গ্রাহকরা গত ২১ সেপ্টেম্বরে রৌমারী উপজেলার বন্দবেড় ইউনিয়নের বাইটকামারী গ্রামে ১নং ফিডারের বিদ্যুৎ সংযোগের কাজে যান দুই কর্মচারী।
বিদ্যুতের লাইনের কাজ চলাকালে স্থানীয় গ্রাহকরা বিদ্যুৎ সংযোগ কাজে বাধা দেয় এবং বিদ্যুৎতের লাইনম্যন সাইদ হাসান ও লেবার আরিফুল ইসলামকে জিম্মি করে রৌমারী জোনাল অফিসে ফোন দেয়। পরে রৌমারী ডেপুটি জেনারেল ম্যনেজার অফিসের লোক পাঠিয়ে পূণরায় সংযোগ দিয়ে কর্মচারিদের উদ্ধার করেন।
বিদ্যুৎ সংযোগ নিয়ে গ্রামবাসি ও বিদ্যুৎ অফিসের দ্বন্দের কারনে প্রায় ১৬ ঘন্টা অন্ধকারে থাকে বাইটকামারী, নলবাড়ী, পাখিউড়া গ্রাম। ফলে ওই তিন গ্রামের গ্রাহকেরা ফজরের নামাজ শেষে বিদ্যুৎ অফিস ঘেরাও করার জন্য মাইকিনে ঘোষণা দেয়। এ ঘটনাকে কেন্দ্র করে গ্রামের মধ্যে উত্যপ্ত পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়েছে। সংবাদ পেয়ে রৌমারী থানার এসআই আব্দুল আওয়ালের নেতৃত্বে পুলিশের একটি দল ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রনে আনে। এ ঘটনায় রৌমারী জোনাল অফিসের ডেপুটি জেনারেল ম্যানেজার নিরাপত্তা চেয়ে উপজেলা নির্বাহী অফিসার সহ বিভিন্ন দপ্তরে লিখিত আবেদন দেন।
বাইটকামারী গ্রামের নবীনুর ইসলাম মোল্লাহ বলেন, আমরা আগে একই লাইনে ছিলাম হঠাৎ করে আমাদের লাইন আলাদা করা হলো। তারাতো ভিআইপি লাইন পাওয়ার কথা না. ভিআইপি লাইন যদি বাগুয়ারচর গ্রামবাসি পায় তাহলে আমরা পাবো না কেনো।
বাগুয়ারচর গ্রামের ফরিদুল ইসলাম বলেন, বাইটকামারী গ্রামের গ্রাহকেরা বিদ্যুৎ অফিসের কর্মচারীদের লাঞ্চিত করে জোর পূর্বক আমাদের লাইন থেকে সংযোগ নেওয়ার কয়েক ঘন্টা পরে হঠাৎ করে ফেইজে আগুন লাগে। এতে স্থানীরা আতংকে পড়ে।
বাগুয়ারচর গ্রামের বাবুল মিয়া বলেন, বাইটকামারী, পাখিউড়া, নলবাড়ী গ্রামে বিদ্যুৎ এর লাইন বন্ধ থাকায় প্রতিবাদে বাইটকামারীর বিভিন্ন মোড়ে মোড়ে গাছের গুড়ি ফেলে অবরুদ্ধ করে রাখে। আমরা বিষয়টি জরুরী ভাবে সমাধানের জন্য উপজেলা প্রশাসনের হস্থ্যক্ষেপ কামনা করছি।
বিদ্যুৎতের লাইনম্যন সাইদ হাসান বলেন, বাইটকামারী গ্রামে লাইনের কাজ সকালে যাই। আমাদের কাজ চলাকালে স্থানীয় গ্রাহকরা এসে আমদের কাজে বাধা দেয় এবং আমদের লাঞ্চিত করে আটকে রাখে। পরে আমাদের জেনারেল ম্যনেজার লোক পাঠিয়ে তাদের কথামতো সংযোগ দিয়ে আমাকে উদ্ধার করে নিয়ে আসে।
স্থানীয় বন্দবেড় ইউপি চেয়ারম্যান বীরমুক্তিযোদ্ধা আলহাজ্ব আব্দুল কাদের সরকার বলেন, বাইটকামারী লাইনটা আগে বাগুয়ারচরের সাথে ছিলো। কি কারণে বিদ্যুৎ অফিস বাইটকামারী গ্রামকে বিছিন্ন করে দিয়ে বাগুয়ারচরে ভিআইপি লাইন দেয়। সেই জন্য বাইটকামারী গ্রামের গ্রাহকেরা বিদ্যুৎ অফিসের লোকদের জিম্মি করে তারা লাইন লাগিয়ে নেয়। বিষয়টি সমাধানের লক্ষে অনেক চেষ্টা করেও ব্যর্থ হয়েছি।
রৌমারী থানার এসআই আব্দুল আওয়াল বলেন, খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে যাই এবং এ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রনে এনে বিদ্যুৎ অফিসের কর্মচারীদের নিয়ে চলে আসি।
রৌমারী ডিপুটি জেনারেল ম্যানেজার মেহেদী হাসান মাসুদ বলেন, আমাদের অফিসে বিভিন্ন সময় লোকজন এসে হামলা চালায় এবং বিভিন্ন গ্রামে বিদ্যুৎ এর কাজে যাওয়া কর্মচারীরা হামলার শিকার হয়। বাগুয়ারচর গ্রামে বিদ্যুৎ এর লাইন লাগাতে না দেওয়ায় দুই গ্রামে উত্যপ্ত পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়। এ ঘটনায় নিারপত্তা চেয়ে উপজেলা নির্বাহী অফিসারসহ বিভিন্ন দপ্তরে আবেদন দিয়েছি।
জামালপুর পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির সভাপতি চান মিয়া বলেন, বাইটকামারী ও বাগুয়ারচর গ্রামে বিদ্যুৎ অফিসের কর্মচারিদের সাথে যে ঘটনা ঘটেছে তা খুবই দুঃখজনক। তবে রৌমারী উপজেলার বিদ্যুৎ এর সমস্যা সমাধানের জন্য কাজ করা হচ্ছে।
উপজেলার নির্বাহী অফিসার কাজি আনিসুল হক এর ব্যবহৃত মোবাইল ফোনে একাধিকবার ফোন করা হলেও তার সাথে কথা বলা সম্ভব হয়নি।